ছোট ভাই ফারুকের অনেক অপকর্মের সুবিধাভোগী ডিআইজি আবদুল কুদ্দুস আমীন। রিং শাইন টেক্সটাইল আইপিও কারসাজিতে ফারুক টাকা ছাড়াই সাড়ে ২৭ কোটি শেয়ার ইস্যু করেছিলেন। এর থেকে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে নিয়েছিলেন ১১ কোটি টাকার শেয়ার। এর ১০ লাখ শেয়ার নিয়েছেন ডিআইজি আবদুল কুদ্দুস। অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দরে এ শেয়ারের মূল্য ১ কোটি টাকা।
সম্প্রতি ফারুক তাঁর গ্রুপভুক্ত বন্ধ কোম্পানি আরএন স্পিনিংয়ের সঙ্গে সামিন ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডকে এবং তালিকাভুক্ত ফার কেমিক্যালের সঙ্গে এসএফ টেক্সটাইলকে একীভূতকরণ করেন। এ ক্ষেত্রে জালিয়াতি হয়েছে মর্মে হাইকোর্টের জন্য পর্যবেক্ষণ তৈরি করেছিল বিএসইসি, যদিও শীর্ষ এক কর্মকর্তার নির্দেশে তা হাইকোর্টে উপস্থাপন করেননি সংস্থাটির আইনজীবী।
এই একীভূতকরণের আগে ডিআইজি কুদ্দুস সামিন ফুডের ৪ লাখ ৮০ হাজার শেয়ার নিয়েছেন, অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দরে। যার মূল্য ৪৮ লাখ টাকা। একীভূতকরণ শেষে একই সংখ্যক শেয়ার পেয়েছেন তিনি। গতকালের বাজারদর অনুযায়ী এ শেয়ারের মোট মূল্য ৭২ লাখ টাকা। এ ছাড়া এসএফ টেক্সটাইলেও তাঁর নামে ৩ লাখ ৫ হাজার শেয়ার নেওয়া হয়। একীভূতকরণ স্কিম অনুযায়ী, এই প্রক্রিয়া শেষে ফার কেমিক্যালের ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫০১টি শেয়ার পেয়েছেন। গতকালের বাজারদর অনুযায়ী এ শেয়ারের মূল্য ৩৮ লাখ টাকা।
সেকেন্ডারি শেয়ারবাজারের কারসাজিতে ডিআইজি কুদ্দুসের নাম এসেছে। ২০১৫-১৬ সালে তালিকাভুক্ত সাফকো স্পিনিং শেয়ার কারসাজির তদন্তে বিএসইসি তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ পায়। ২০২১ সালের মে থেকে জুনের মধ্যে সাফকোর শেয়ারদর ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩২ টাকা করা হয়। পরে ডিআইজি কুদ্দুসকে গত ২৮ মে শুনানিতে অংশ নিতে চিঠি দেয় বিএসইসি। তবে তিনি শুনানিতে হাজির হননি। পরে গত ১২ জুন পুনঃশুনানির অনুরোধ করলে সেটি অনুষ্ঠিত হয় ১৮ জুন। একটি লিখিত ব্যাখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুন বিএসইসি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু সতর্ক করে তাঁকে অভিযোগ থেকে নিস্তার দেয়।
এদিকে ফারুকের ভাই ব্যারিস্টার আবদুল মাবুদ মাসুম এবং তাঁর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান দ্য লয়ার্স অ্যান্ড জুরিস্টসের বিরুদ্ধে সরাসরি শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বিএসইসি। ২০১৬ সালে জুলাইতে গঠিত বিএসইসির তদন্ত কমিটি ২০১৫ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আরএন স্পিনিংয়ের শেয়ার কারসাজির ঘটনায় ফারুকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, নিকট আত্মীয়ের ২০টি অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করে। এর মধ্যে আইএল ক্যাপিটাল নামক মার্চেন্ট ব্যাংকে ব্যারিস্টার মাসুমের অ্যাকাউন্ট একটি। এ ছাড়া দ্য লয়ার্স অ্যান্ড জুরিস্টসের নামে খোলা আইএল ক্যাপিটাল, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ, এমটিবি সিকিউরিটিজ এবং ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের চার অ্যাকাউন্টেরও সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় বিএসইসি।